বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন চট্টগ্রাম গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যাসোসিয়েশনের (সিজিএএ) নেতারা। বুধবার (১ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংক সচিবালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় ব্যবসায়ীরা বলেন, ব্যাংকের নানা বিধি-নিষেধ ও জটিলতায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন গার্মেন্টস এক্সেসরিজ ব্যবসায়ী তথা পোশাক শিল্পের প্রচ্ছন্ন রপ্তানিকারকরা। রপ্তানির পরও সময়মতো এলসি পেমেন্ট না পাওয়া, ইএক্সপি বা রপ্তানি অনুমতির মেয়াদ কম হওয়া, ইডিএফ বা এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ড আটকে দেওয়া, তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে ‘ক্রেডিট রিপোর্ট’ আদায়ে বাড়তি অর্থ ব্যয়, আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে টাকার বিনিময় হারের তারতম্যসহ নানা সমস্যা ব্যবসা প্রায় বন্ধের উপক্রম। এসব সমস্যা সমাধানে তারা বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এছাড়া ব্যাংক কর্তৃক অহেতুক ডিসক্রেপিন্সি বন্ধের আহবান জানালে এ সমস্যা সমাধানে গভর্নর তাৎক্ষনিকভাবে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করেন।
আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো হল
ব্যাক টু ব্যাক এলসি পেমেন্ট জটিলতা : নির্ধারিত সময়ে ব্যাক টু ব্যাক এলসির পেমেন্ট পরিশোধ না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা চরম আর্থিক চাপে পড়েছেন। অনেক ব্যাংক নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলে ওভারডিউ ইন্টারেস্ট দাবি করছে যা ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যয়বহুল। এ বিষয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
ইএক্সপি মেয়াদ বৃদ্ধি : বর্তমানে ইএক্সপি মেয়াদ ১২০ দিন যা পণ্য রপ্তানি ও পেমেন্ট প্রাপ্তির জন্য অপ্রতুল। অতীতে এটি ১৮০ দিন ছিল। রপ্তানিকারকরা ইডিএফ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় এবং অতিরিক্ত সুদের বোঝা বহন করতে বাধ্য হওয়ায় ইএক্সপি মেয়াদ কমপক্ষে ১ বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
ক্রেডিট রিপোর্ট সংগ্রহের খরচ : প্রতিটি আমদানির জন্য ক্রেডিট রিপোর্ট সংগ্রহ করতে অতিরিক্ত ১০০-১৫০ ডলার খরচ হয়। এছাড়া সময়ক্ষেপণও ঘটে। নেতৃবৃন্দ কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ডেটা ব্যাংক স্থাপনের মাধ্যমে তফসিলি ব্যাংকের মাধ্যমে এই সেবা সহজলভ্য করার অনুরোধ জানান।
বিনিময় হারে পার্থক্য : আমদানি ও রপ্তানির বিনিময় হারে বর্তমানে ৫-৮ টাকার পার্থক্য রয়েছে। রপ্তানিকারকরা এই পার্থক্য পূর্বের মতো ১-২ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন।
গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর’র উপস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সাইফুল ইসলাম, পরিচালক (এফইপিডি) মো হারুন অর রশিদ. পরিচালক (বিআরপিডি) মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকি উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি ও ব্রিটানিয়া লেভেল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জামিল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক ও এবিএস কাটন এন্ড এক্সসরিজ ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ বেলাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও এনটুএস লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক ও শরীফা প্রিন্টার্স অ্যান্ড প্যাকেজার্স (প্রা.) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহমুদ আহসান টিটো, পরিচালক ও এক্সপো এক্সেসরিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. এনামুল হক, অফিস ডেপুটি সচিব অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাফেজ আহমেদ।
সভায় সিজিএএ এর নেতৃবৃন্দের আর্থিক খাত সংশ্লিষ্ট দাবি এবং সমস্যাগুলো গভীর মনোযোগ দিয়ে শোনা হয় এবং উত্থাপিত সমস্যা/দাবিগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে দ্রুত সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
খুলনা গেজেট/এএজে/এমএম